কাম ও ভালোবাসা – ধারাবাহিক বাংলা চটি – পর্ব ৮ – ভাগ ১

Kamdev 2014-11-02 Comments

অনুপমা হাঁ করে তাকিয়ে থাকে দেবায়নের দিকে, “কম্পানি? কিসের কম্পানি? কার কম্পানি?” পারমিতার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কিসের কন্সট্রাক্সান কোম্পানির কথা বলছে দেবায়ন?” পারমিতার মুখ পাপের ভারে রক্ত শূন্য হয়ে যায়। মাথা নিচু করে চুপ করে বসে থাকে, মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দেবার ভাষা খোঁজে।

দেবায়ন একবার মিস্টার সেনের দিকে তাকায় একবার পারমিতার দিকে তাকায়। বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পরে মিস্টার সেন উত্তর দেয়, “সেটা অসম্ভব, সেটা হতে পারে না। আত্মীয় সজ্জন, সোসাইটির লোকজন কি বলবে? জানো ওই কোম্পানির জন্য কত কাঠ খড় পুড়াতে হয়েছে? তুমি এই সেদিনের ছেলে তুমি কি জানবে আমাদের মতন স্ট্যাটাসের লোকেদের কথা।”

অনুপমা দৃঢ় স্বরে মিস্টার সেনকে বলে, “আমি শেষবার বলছি, আমার সামনে দেবায়ন কে এই রকম করে বলবে না”

দেবায়ন গম্ভির গলায় বলে, “আপনার কাছে আপনার স্ত্রী, আপনার মেয়ে, আপনার ছেলের চেয়ে টাকা বড়।” চিবিয়ে চিবিয়ে “সেটা স্বাভাবিক আপনার মতন তথাকথিত উচ্চবিত্ত ইতর মনভাবের মানুষের।”

মিস্টার সেন গর্জে ওঠে, “তুমি আমাকে ইতর বললে। এত বড় সাহস তোমার।”

পারমিতা মিস্টার সেনের দিকে চেঁচিয়ে বলে, “থাম, দেবায়ন যা বলেছে সেটাই আমি করব। ও বলেছে কন্সট্রাকশান কম্পানি বিক্রি করে দিতে, আমি সেটাই করব।”

মিস্টার সেন মাথা নিচু করে বসে থাকেন। রাগে, বিতৃষ্ণায়, ঘৃণায় শরীর কাঁপতে শুরু করে দেয় মিস্টার সেনের। স্ত্রী, কন্যের সামনে কোন ঠাসা হয়ে গেছেন। বসার ঘরের কোনায় মিনি বারের পা বাড়ান মিস্টার সেন। দেবায়ন গম্ভির গলায় আদেশ দেয়, “চুপচাপ বসে পড়েন, কোথাও যাবার চেষ্টা করবেন না। আপনার সাথে আরও কথা আছে।”

দেবায়নের হুঙ্কার শুনে সোফার ওপরে ধুপ করে বসে পরে মিস্টার সেন। পারমিতা দেবায়নের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। অনুপমা দেবায়নের পেছন থেকে জাম খামচে ধরে থাকে। এই সব বাকবিতন্ড ওকে যেন পুড়িয়ে মারছে।
দেবায়ন পারমিতার মুখের দিকে তাকিয়ে তারপরে মিস্টার সেন কে বলে, “আপনাকে জিএম পোষ্ট থেকে রিজাইন দিতে হবে। ওই অফিস থেকে রিজাইন দিতে হবে। নিজের কলিগ সার্কেল বদলে ফেলতে হবে।”

চিৎকার করে ওঠে মিস্টার সেন, “না, সেটা হতে পারে না। আমার মান সন্মান সব কিছু জড়িত।”

রাগে উত্তেজনায়, অনুপমার নখ বসে যায় দেবায়নের পিঠের ওপরে। দেবায়ন অনুপমার হাত ধরে শান্ত করায়। দেবায়ন মিস্টার সেনের দিকে তির্যক হেসে বলে, “জানা আছে আপনি কোন মান সন্মান দিয়ে ওই জিএম পদ পেয়েছেন।” দেবায়ন পারমিতার দিকে তাকিয়ে দেখে যে পারমিতা কেঁদে চলেছে। মিস্টার সেনকে বলে, “আমি আপনাকে অনুরোধ করছি না।”

মিস্টার সেন দেবায়নের দিকে শ্যেন দৃষ্টি হেনে বলে, “তুমি পাগল নাকি? কি করে ভাবলে, তুমি যা বলবে সেটা আমি শুনব। তোমার কথা শুনে কেন করতে যাব? তুমি জানো আমার এক ফোনে তোমাকে পুলিস এখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে লকআপে পুরে দিতে পারে।”

দেবায়ন বলে, “সেটা ভালো করে জানি আপনি কি করতে পারেন। সেই ভয় যদি আমার থাকত তাহলে আমি আপনার সামনে দাঁড়াতাম না, চুপ করে চলে যেতাম। কেন আছি জানেন? শুধু মাত্র অনুর জন্য।”

পারমিতা মিস্টার সেনের দিকে চোয়াল শক্ত করে বলে, “ভুলেও কিছু উলটো পাল্টা পদক্ষেপ নেবার কথা চিন্তা করবে না।” স্ত্রীর গলার কঠিন স্বর শুনে মাথা নিচু করে থাকে মিস্টার সেন।

অনুপমা দেবায়নকে জিজ্ঞেস করে, “কি কম্পানি? কার কম্পানি?”

দেবায়ন মিস্টার সেনের দিকে তাকিয়ে বলে, “আপনার মেয়ে আপনাকে একটা প্রশ্ন করেছে। উত্তর আপনি দেবেন না আমি দেব।”

পারমিতা হাত জোর করে দেবায়নের দিকে ইশারায় জানায় যে কথা না জানাতে। দেবায়ন দাঁত পিষে পারমিতার দিকে তাকিয়ে কাছে বসতে বলে। এক পাশে অনুপমা অন্য পাশে পারমিতা, সামনে মিস্টার সেন বসে। দেবায়ন পারমিতাকে বলে, “একবার জীবনে সত্যি কথা বল কাকিমা। দেখবে ভালো লাগবে।”

পারমিতা মাথা নিচু করে বলে, “আমার নামে একটা কস্ট্রাকশান কম্পানি আছে।” মিস্টার সেন চোখ বন্ধ করে মাথায় হাত দিয়ে বসে। পারমিতা বলে, “সেই কন্সট্রাশান কম্পানি তোর জেঠুর ছিল। জেঠু মারা যাবার আগে সেই কম্পানি আমার নামে লিখে দেয়। সেই কোম্পানির কথা তোদের জানাইনি কেননা সেই কোম্পানির সব কিছুই কালো, সব কিছুর মধ্যে আমার শরীরের প্রতি ইঞ্চি বিক্রি করে আয় করা।” নিচু গলায় বলে, “পুরো কম্পানিটাই আমার দেহের ওপরে দাঁড়িয়ে।”

মিস্টার সেন চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে বসে থাকেন। অনুপমা দুই হাতে কান বন্ধ করে দেবায়নের কাঁধে মাথা পিটিয়ে, কেঁদে ওঠে, “আমি আর সহ্য করতে পারছি না, আমাকে একটু বিষ দিতে পারিস।”

অনুপমাকে বাম হাতে জড়িয়ে বুকের কাছে চেপে ধরে দেবায়ন, “পুচ্চি, তুই উপরে যা। সারা রাত ঘুমাস নি, নিজের ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নে।”

অনুপমা, “আমার ঘুম উড়ে গেছে। এত সব দেখে আর শুনে, এখানে আর এক মিনিট থাকতে ইচ্ছে করছে না। আমাকে কোথাও নিয়ে চল, প্লিস।”

দেবায়ন কড়া সুরে অনুপমাকে আদেশ দেয়, “পুচ্চি, তোকে যেটা বলা হয়েছে সেটা কর। তুই উপরে যা, সময় হলে ডাক দেওয়া হবে।” অনুপমা ধমক খেয়ে কাঁদো কাঁদো মুখ করে অনিচ্ছা সত্তেও ওদের ছেড়ে উপরে উঠে যায়।

অনুপমা চলে যাওয়ার পরে পারমিতা মিস্টার সেনের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমাকে নিঙরে অনেক কিছু করেছ, একবার ভেবেছিলাম যে এই রকম হয়ত চলতেই থাকবে। আমি তোমার হাই সোসাইটির হোড় হয়ে থাকব।”

মিস্টার সেন পারমিতাকে বলে, “কে বাঁদি? তোমার কথায় সবাই ওঠে বসে। বাড়িতে কেউ কি আমার কথা শোনে?”

পারমিতা, “খাও ত আমার পয়সায়। এই বাড়ির সবকিছু আমার পয়সায়, ওই চাকরি তে জিএম হয়েছ আমার জন্য। কত ক্লায়েন্ট যোগাড় করে দিয়েছি, সব আমার জন্য। যখন যেতে বলেছিলে বউকে তখন মনে ছিল না যে কি হতে পারে এর ভবিষ্যৎ?”

Comments

Scroll To Top