বাংলা চটি গল্প – আলোর জীবন কাহিনী – ৩

(Alor Jibon Kahini 3)

Rahuldas 2015-10-05 Comments

This story is part of a series:

নিজের ঘরে এসে বসলাম, সারা শরীর উত্তেজনায় কাঁপছে, আগুন নিয়ে খেলা করছিলাম আমি, সবাইকে কি পুড়িয়ে ছাড় খার করে দেব আমি | একটা জেদ চেপে ছিল আমার মধ্যে, আমাদের মতো কালো মেয়েদের কেউ ভালবাসে না? কেন | ভালবাসা আদায় করব, যিষ্ণুর ভালবাসা আদায় করব আমি |

আধ ঘন্টা পর যিষ্ণু ছাদ থেকে নেমে আসলো | মনে হচ্ছে চোখ মুখ জল দিয়ে ধুয়েছে | কেমন যেন বোকার মতো তাকাচ্ছিল আমার দিকে | মা খেতে ডাকলো | আমরা খেতে বসলাম, মা, আমি আর যিষ্ণু | মা যিষ্ণু কে তাদের দেশের বাড়ির গল্প সোনাচ্ছিল | যিষ্ণু মন দিয়ে শুনছিল |

খাওয়া দাওয়ার পর মা যিষ্ণু কে দাদার ঘরে বিশ্রাম করতে বলল | মা আর আমি নিজেদের ঘরে গেলাম | আমার ঘুম পাচ্ছিল না | শুধু যিষ্ণুর মুখটা ভাসছিল | আজ যখন যিষ্ণু কে জড়িয়ে ধরে ছিলাম, আমার দুধ দুটো ওর বুকের মধ্যে সক্ত হয়ে গিয়ে ছিল | যিষ্ণু কি টের পেয়েছিল? কি ভাববে আমাকে | ছিঃ, ওটা করা টা বোধ হয় উচিত হয় নি, কিন্তু তখন আবেশের মাথায়ে জড়িয়ে ধরে ছিলাম, ওকে একা পাবো সারা দিন ভেবে | এত তারা তারি যে আমি একা যিষ্ণুর সাথে সারা দিন প্রেমিক প্রেমিকার মতো কাটাতে পারব ভাবি নি | কি করবো সারা দিন? কথায়ে যাব, কি করে আমার মনের কথা ওকে সোনাব | কিছু একটা উপায় বার করতে হবে |

বিকেল ৫ টা নাগাদ মা আর আমি উঠে চা করলাম | মা যিষ্ণু কে ডেকে তুলল | যিষ্ণু হাথ মুখ ধুয়ে আমাদের সাথে চা খেতে বসলো | তখনি বাবা আর শ্যামল বাড়ি ফিরল | আর কিছুক্ষণ পর ছোরদা আর দাদা ও বাড়ি ফেরত এলো | সবাই মিলে যিষ্ণু কে ঘিরে গল্প করতে লাগলো, আমি শুধু দূর থেকে সবার চোখ বাঁচিয়ে যিষ্ণুর মুখটা দেখছিলাম | রাত আট টা নাগাদ যিষ্ণু নিজের বাড়ির দিকে রওনা দিল |

আমি কাছে গেলাম না, ভীষণ মন খারাপ লাগছিল তাই | ছাদ থেকেই দেখলাম | অন্ধকারে যিষ্ণু বুঝতে পারল না আমি ওকে দেখছি | বুকটা যেন ফাকা হয়ে গেল, চোখ দিয়ে আমার জল গড়িয়ে পড়ল | ঘরে ঢুকে আমার মাথায় কু বুদ্ধি ঢুকলো, গত কাল আমার পিরিয়ড শেষ হয়েছিল. মা কে বললাম একটা মাথা ব্যাথার ওষুধ নিয়ে আসছি | ওষুধের দোকানে গিয়ে একটা মাথা ব্যাথার ওষুধ আর এক মাসের গর্ব নিরোধক ট্যাবলেট কিনলাম | বাড়ি ফিরলাম | ওষুধ খেতে শুধু করলাম |

ছয়টা দিন…….এই ছয়টা দিন যেন কিছু তেই কাটছিল না | সময় যেন আটকে আছে |তার মধ্যে কাটা ঘায়ে নুন ছেটাতে পাসের বাড়ির কাকিমা আসলো | কাকিমা যিষ্ণু কে দেখেছিল | মা কে জিজ্ঞেস করলো ছেলেটি কে, মা বলল | কাকিমা বলল ছেলেটি খুব ভালো | মা ও যিষ্ণুর প্রচুর প্রসংসা করলো |
কাকিমা বলল, “আমার মধুর বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে তা না হলে তোমাদের বলতাম যদি ওদের জাত বিচার না থাকে সম্বন্ধ পাতানো যেত |”
কথাটা শুনে আমার হিংসাতে গা জ্বলে গেল | ইচ্ছে করছিল চেঁচিয়ে বলি, ‘নজর দেবে না যিষ্ণুর দিকে | চোখ গেলে দেব |’
মা কাকিমাকে তখন হাসতে হাসতে বলল, “বলতো তোমার ছোট মেয়ের জন্য কথা পারতে পারি |”

কাকিমা বলল, “দীপ্তি তো সবে ১৯ এ পড়ল | দুই বছর পরে বিয়ের চেষ্টা করব | তত দিন কি ওর বাবা মা অপেক্ষা করবে |”
মা কি বলল শুনবার জন্য অপেক্ষা করিনি, রাগে, আমার শরীর কাঁপছিল | কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে উঠে নিজের ঘরে গেলাম | ভীষণ হিংসা হচ্ছিল |

এমনিতে কাকিমারা খুব ভালো | মাস আটেক হলো আমাদের পাসে এসেছে | দুই মেয়ে | মধু আর দীপ্তি | মাধুদী আমার থেকে এক বছরের বড় আর দীপ্তি আমার থেকে দুই বছরের ছোট | আমরা সময় পেলে তিনজনে মিলে গল্প করতাম | কিন্তু আজ যেন ওদের আমার শত্রু মনে হলো | ওদের আমি হিংসা করতে লাগলাম |

অবশেষে আমার অপেখ্যা শেষ হলো | ছয় দিন পর প্রতিক্ষিত সোমবার এসে হাজির হলো | আমার বুকের মধ্যে একটা চাপা ভয় উকি দিচ্ছিল কিন্তু মনে একটা উত্তেজনাও ছিল | বাবা মা কে আগেই বলে রেখে ছিলাম, এটা আমার ফাইনাল ইআর | তাই ক্লাস শেষ করে আমরা বন্ধুরা মিলে লাইব্রেরি তে নোটস তৈরি করব | বাড়ি ফিরতে দেরী হবে |

স্নান সেরে, একটি কচি কলাপাতা রঙের শারী পরে কলেজ যাবার জন্য তৈরী হলাম | দশটার মধ্যে কলেজ এ পৌছলাম | তিন তলায়ে কমন রুম এর একটি জানালার পাসে বসে কলেজ এর গেট এর বাইরে নজর রাখছিলাম | বুক টা ধরফর করছিল | আসবে তো..দু চারটে বন্ধুরা এসে ছিল, হাসি ঠাট্টা চলছিল, বললাম আজ ক্লাস করব না, হয় তো বেরোব | একটি মেয়ে জিজ্ঞেসা করলো কোথায়, বললাম দেখি কোথায় নিয়ে যায় | সবাই হাসতে হাসতে বলল, “ওওওওহহহ, বয় ফ্রেন্ড …. ভালো, যা ঘুরে আয় |”

এগোরটা বাজতে পাঁচ মিনিট আগে দেখি ট্যাক্সি থেকে যিষ্ণু নামছে | আমি উঠে পরলাম | বন্ধুরা আমাকে আটকে দিল, জিজ্ঞেসা করলো, “কোনটা রে?” দেখালাম, সবাই হা করে তাকিয়ে রইলো | আমি দৌড়ে নীচে নেমে আসলাম | নিজেকে একটু সম্ভলে, আস্তে আস্তে যিষ্ণুর দিকে এগোলাম | যিষ্ণু আমাকে দেখে যেন একটা পাথরের মূর্তির মতন দাড়িয়ে রইলো, চোখ দুটো বড় বড় করে যেন একটা আশ্চর্য জিনিস দেখছে | “সুপ্রভাত যিষ্ণু,” বলতে বলতে আমি ওর দিকে এগিয়ে গেলাম | যিষ্ণু কেমন বোকার মতো আমতা আমতা করতে লাগলো | কাছে গিয়ে আলতো ধাক্কা দিলাম, স্বপ্নের দেশ থেকে ও ফেরত আসলো |

Comments

Scroll To Top