বাংলা চটি উপন্যাস – একটি গ্রামের রুপকথা – ৪
(Ekti Gramer Rupkotha - Part 4)
This story is part of a series:
–শুনেছি গ্রাজুয়েশন করেছিস আর পড়লি না কেন?অনুদি জিজ্ঞেস করে।
–কলকাতায় গিয়ে পড়া বুঝতেই পারছো–এখন কি সে অবস্থা আছে?
–চাকরি-বাকরির চেষ্টা করছিস না?মাসিমা আছেন,তোর ভবিষ্যৎ আছে।
–চাকরি পেতে গেলে যে ক্যালি দরকার,আমার হয়তো তা নেই।
–কি করে বুঝলি,চেষ্টা করেছিস?
–বার কয়েক ভাইবা-তে চান্স পেয়েওছিলাম।
–তাহলে আটকালো কোথায়?
–যা সব প্রশ্ন করে তার মানেই বুঝতে পারিনা। চাকরি করতে চাও কেন? কি বলবো ? চাকরি নাহলে খাবো কি, বিয়ে হবেনা এইসব বলবো?
রিনরিন করে হেসে ওঠে অনুদি,তোর যা চেহারা চাকরি না করলেও অনেক মেয়েই তোকে বিয়ে করবে।
–এসব শুনে শুনে এখন আর ভাল লাগেনা।
–কি ভাল লাগে তোর?
–এইযে তোমার সঙ্গে কথা বলছি বেশ ভাল লাগছে।
অনুদি গম্ভীর হয়ে গেল।চুপচাপ হাটতে থাকি এক সময় বলে,তুই আমার দুটো কাজ করে দিবি?
আমাকে দেখলে কি সবার কাজের কথা মনে পড়ে? ভাবে হয়তো বেকার হাবাগোবা টাইপ একটু খাটিয়ে নেওয়া যাক।
–কি কাজ খুব শক্ত কিছু নয়তো?
–তা একটু শক্ত বইকি? মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে। আমাকে একটু এগিয়ে দে।
–কি কাজ বললে না তো?
–হ্যাঁ কাল বিকেলে আয় তখন বলবো। বাড়ি চিনিস তো?
বাসায় ফিরতে মা জিজ্ঞেস করে, কোথায় থাকিস? লোকজন এসে ফিরে যায়।
–কে এসেছিল?
–অতুল এসেছিল ওর বউ বাড়ী ছেড়ে চলে গেছে। ভেবেছিল এখানে এসে থাকতে পারে।
–রেবতিবৌদি চলে গেছে?
–বেশ মেয়েটা কেন যে চলে গেল? বিজুর যা মুখ একটু মানিয়ে চলতে পারেনা।
মনটা খারাপ হয়ে গেল।অতুলদার কি দেখে যে বিয়ে দিয়েছিল রেবতীবৌদির বাবা-মা কে জানে? মেয়েকে ঘাড় থেকে নামানোর এত ব্যস্ততা?এখন আমি বেশ বুঝতে পারি ছেলে মানুষ নই।ভাত-কাপড় অবশ্যই গুরুত্বপুর্ণ কিন্তু তাছাড়াও আরও কিছু আছে যাকে উপেক্ষা করা যায় না।খুব খারাপ লাগে রেবতী বৌদির কথা ভেবে,কোথায় গেল কার সঙ্গে গেল? কেমন আছে এখন?
সুর্য হেলে পড়েছে পশ্চিম দিগন্তে। ডায়েরি শেষ করে এনেছি প্রায়। শেষ দিকটা বড় করুণ। বলেন্দ্র মোহনের বল কমে গেছে। শারীরিক শক্তি সামর্থ্য তেমন নেই।কঠিন যৌন ব্যধিতে আক্রান্ত শুয়ে শুয়ে দিনাতিপাত হয়। ” ….বড় অন্যায় করিয়াছি মণির প্রতি। ….একবার যদি বউমার দেখা পাইতাম তাহা হইলে মার্জনা ভিক্ষা চাইতাম….আমি জানি বউমা আমার জগদ্ধাত্রী আমার প্রতি মণির যত ঘৃণাই থাকুক ব্রৃদ্ধ সন্তানটিকে তিনি ফিরাইয়া দিতে পারিতেন না….।”
বলেন্দ্র মোহনের মনে শেষ দিকে পরিবর্তন এসেছিল। মা চা নিয়ে এল।মাকে দেখলাম আপাদ মস্তক।
–মা তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
–কি কথা? শোন যেখানেই যাও অত রাত করে ফিরবেনা।
–ঠাকুরদা যদি তোমার কাছে ক্ষমা চায় তুমি তাকে মাপ করতে পারবে?
–যত আজেবাজে কথা। আমার কাজ আছে–।মা কি যেন ভাবেন,শোন মানু দোষেগুণে মানুষ একটা দিক দেখে কারো বিচার করা ঠিক না।সব সময় মানুষের ভাল দিকটা দেখবি তাহলে দেখবি পৃথিবী কত সুন্দর।তোর বাবাকে বলেছিলাম একবার খোজ নিতে–।মেয়েদের তোরা মানুষ বলে ভাবলে তো? মার গলা ধরে আসে।
আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি। সত্যি মা আমার জগদ্ধাত্রী। বলেন্দ্র মোহনের চিনতে ভুল হয়নি। এখন একবার বেরোতে হবে। দেখি অনুরাধাদি কি কাজ দেয় আবার? কবিরা খুব সংবেদনশীল হয় শুনেছি।
অনুরাধাদি সেজেগুজে কোথাও বের হচ্ছে মনে হল।খুব সাদামাটা সাজগোজ। দীর্ঘদেহি চওড়া পিঠের উপর ছড়ানো একরাশ কালো চুল। কাঁধে একটা ঝোলা ব্যাগ।দময়ন্তীর চুল কাঁধ অবধি ছোট করে ছাটা।আমাকে আসতে বলে বেরিয়ে যাচ্ছে?
–কোথাও যাচ্ছো?
–হ্যা তোর জন্য অপেক্ষা করছি,চল।
–কি কাজ দেবে বলেছিলে তুমি?
–এইতো কাজ।
হাটতে হাটতে স্টেশন অবধি গিয়ে ট্রেনে উঠালাম।দুটো স্টেশন পর মাজদিয়া। কলকাতার বিপরীত দিকে,আগে এদিকে আসি নি। কলকাতায় গেছি অনেকবার।অনুদি বলেছিল দুটো কাজের কথা,ওর সঙ্গে যাওয়া হচ্ছে এক নম্বর।স্টেশন থেকে বেরিয়ে রিক্সা স্ট্যাণ্ড,তারা রিক্সা নিয়ে এগিয়ে আনতে অনুদি বলল, আজ হেটে যাবো।সঙ্গে ভাই আছে।
অনুদি মনে হল প্রায়ই এদিকে আসে।পাকা রাস্তা ছেড়ে কাচা রাস্তায় নামলাম।আম-জাম-তেতুল-বকুল-কদম-শিমুলের ঘন নিবদ্ধ জটলা।নীচে আশ শ্যাওড়া-আকন্দ-গোয়ালালতা-ভুতচিংড়ের ঠাস বুনট তার মধ্য দিয়ে সুঁড়ি পথ।
–কিরে মনা ভাল লাগছে না?
–কোথায় যাচ্ছি বললে নাতো?
–সাসপেন্স।গেলেই দেখতে পাবি।
বিশাল ভাঙ্গাচোরা জীর্ণ বাড়ির নীচে এসে যাত্রা শেষ হল।বাড়ির সামনে আগাছায় ভরা জঙ্গল।ভিতরে ঢুকে দেখলাম ক্ষয়া ক্ষয়া সিঁড়ি উপরে উঠে গেছে। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে একটা বৈঠকখানা গোছের ঘর।পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বোঝা গেল ঝাড়পোছ হয়। আমরা ঢুকতে পাশের ঘর থেকে একটি বছর কুড়ি-বাইশের ফুটফুটে সুন্দরি মেয়ে বেরিয়ে এসে বলল, দিদি আপনি?
মেয়েটি কুমারী না বিবাহিত বোঝার উপায় নেই।
অসমাপ্ত ……..
What did you think of this story??
Comments