Bangla Golpo Choti – রতিঃ এক কামদেবী নিরবধি – ৪০

(Bangla Golpo Choti - Roti Ek Kamdebi Nirbodhi - 40)

fer.prog 2017-10-30 Comments

This story is part of a series:

Bangla Golpo Choti – অপহরন থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়ী ফেরাঃ

ভোলা যে ওর কথা এইভাবে রাখবে, সেটা নিয়ে গতকাল সারা রাতই একটু সংসয়ে ছিলো রতি। তবে অবশেষে ভোলাদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে সে দারুন খুশি, নিজের চেয়ে ও আকাশ আর রাহুলের জীবন বাঁচিয়ে ফিরতে পেরেছে, সেই জন্যে বেশি খুশি সে।

ওরা তিনজনে কিছুদুর হেঁটে যেতেই একটা গাড়ি পেয়ে গেলো। ওটাকে ভাড়া করে ওরা নিজেদের বাংলোর কাছকাছি চলে এসেছে, এমন সময়ে খলিল কে বাংলো থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে দেখলো।

খলিল ওদের দেখেই গাড়ি থামিয়ে দৌড়ে এসে রতিকে জড়িয়ে ধরলো। ওদেরকে খুঁজার জন্যেই যে খলিল এই ভোর বেলা পুলিশ আর আর্মি নিয়ে বের হচ্ছিলো জানতে পারলো রতি।

রতি শুঁকনো মুখে ওর স্বামীকে বললো, “আমরা তো পাহাড় দেখতে গিয়েছিলাম, ফিরার পথে পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম, এর পরে একটা আদিবাসীর বাড়িতে রাতটা কাটালাম। সকালে ওরাই আমাদেরকে জঙ্গল পার করে মেইন রাস্তায় রেখে গেছে, তোমাকে যে ফোন করে জানাবো, সেই উপায় ও ছিলো না, মোবাইল এর নেটওয়ার্ক ছিলো না একদম…”

রতির কৈফিয়ত যদি ও খলিলের সন্দেহ ও আশঙ্কা পুরোপুরি দূর করতে পারলো না, কিন্তু এই নিয়ে সে এখন রতিকে রাস্তার মাঝে জেরা করতে চাইলো না। রতি ঠিকভাবে হাঁটতে ও পারছিলো না, কষ্ট হচ্ছিলো ওর হাঁটতে, সেটা দেখে জানতে চাইলো খলিল।

রতি বললো, “গতকাল পাহাড়ে চড়তে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি কোমরে, পায়ের সাথে কোমরের রগে টান লেগেছিলো, সেই জন্যে এখন ও ঠিকভাবে হাঁটতে পারছি না, তবে চিন্তার কিছু নেই, ঠিক হয়ে যাবে, দু-একদিন বিশ্রাম নিলে…”।

আজ পর্যন্ত কোনদিন খলিল সাহেব রতিকে অবিশ্বাস করার কোন কারণ খুঁজে পায় নি, আজ ওর সাথে ওর ছেলে আর ছেলের বন্ধু ও ছিলো, তাই তেমন কোন সন্দেহ উদয় হলো না খলিলের মনে। খলিল ওর বন্ধুদেরকে ফোনে জানিয়ে দিলো যে ওর স্ত্রী ও ছেলেরা ফিরে এসেছে, ওরা জঙ্গলে পথ হারিয়ে একটা আদিবাসী পরিবারে রাত কাটিয়েছিলো।

হোটেলে ফিরে রতি প্রথমে লম্বা একটা স্নান সেরে নিলো, আর পরে সবাই মিলে সকালের খাবার খেলো। আকাশ আর রাহুল এখন ও যেন ঘোরের ভিতর আছে। খলিল সাহবের কথার জবাব ছোট ছোট কথায় দিচ্ছিলো আকাশ আর রাহুল।

ওরা সবাই খুব ক্লান্ত, তাই আজকে ওদের নিয়ে ঘুরতে যাবার প্লান বাদ দিতেই হবে। রতি সোজা বিছানায় চলে গেলো আর কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলো। রাহুল আর আকাশ ও খুব ক্লান্ত ছিলো।

চরম অনিশ্চয়তা আর উত্তেজনার মাঝে সমগ্র রাত কাটিয়ে দেয়ার পর এখন খুব ঘুম পাচ্ছে ওদের ও। ওদের নির্দিষ্ট রুমে গিয়ে ওরা ঘুমিয়ে পড়লো। খলিল সাহেব একা হয়ে গেলেন। উনি রতিকে ঘুমানোর সুযোগ দিয়ে বাংলো থেকে বেরিয়ে গেলেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে।

রতির ঘুম ভাঙ্গলো বিকাল ৪ টার দিকে। অঘোরে ঘুমিয়েছে সে এই পুরো সময়টা। দুপুরের লাঞ্চ খলিল সাহেব একাই খেলেন, স্ত্রীর গভীর ঘুম দেখে তাকে জাগাতে মন চাইলো না খলিলের।

রাতে ওরা সবাই মিলে ডিনার করলো, যদি ও রতির চেহারা দেখে বুঝা যায় যে কিছু একটা তার ছিঁড়ে গেছে ওর, তাই সব কিছু কেমন যেন এলোমেলো। যদি ও খলিল সাহেব এটা নিয়ে বেশি জেরা করতে চাইছলেন না রতিকে।

তবে ছেলেদেরকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এটা সেটা জানতে চাইছিলেন তিনি বার বার। আকাশ আর রাহুল ওর মায়ের মিথ্যার সাথে তাল মিলাতে মিলাতে অনেকগুলি মিথ্যে কথা ও বলে ফেললো খলিল সাহেবকে।

রাতে রতি রাজি করিয়ে ফেললো খলিল সাহেবকে, যে আগামীকাল সকালেই ওরা রওনা দিবে বাংলো থেকে, আর সোজা ঢাকায় ফিরে যাবে। যদি ও খলিল সাহেবের ইচ্ছা ছিলো, আরও ২/১ টা দিন থেকে যাবার কিন্তু রতি খুব জোর দিতে লাগলো যেন ওরা কালই ফিরে যায়, রতির শরীরটা তেমন ভালো না, ওর ডাক্তার দেখাতে হবে, রগের ব্যথাটা কমছে না। আবার ডাক্তার কেন দেখাতে হবে, কি সমস্যা, সেটাও সম্পূর্ণ খলিলকে খুলে বলছে না রতি।

তাই পরদিন সকালেই ওরা রওনা দিবে কথা হলো। আকাশ আর রাহুলকে ও জানিয়ে দেয়া হলো যেন ওরা সব গোছগাছ করে রাখে, সকালে ভোরে ওরা রওনা দিবে। রাহুল আর আকাশের মধ্যে ও কথা কমে গেছে, দুজনের মনের কথা দুজনের কেউই কাউকে বলতে পারছে না।

রতিকে যা যা করতে ওরা দেখেছে ওই একটা রাতে, সেটা মাথা থেকে সড়াতে পারছে না কেউই। রাহুল ভেবে পাচ্ছে না আকাশের সাথে ও কি নিয়ে কথা বলবে, এতো বড় ঘটনা হয়ে যাবার পর, এখন ওই একটি বিষয় ছাড়া আর যে কিছু খুঁজে পাচ্ছে না ওরা দুজনেই কথা বলার মত।

একই অবস্থা রতির নিজের ও, পাহাড় থেকে ঢাকায় ফিরার পর ও যেন স্বাভাবিক হতে পারছে না। খলিল সাহেব ঢাকায় ফিরেই কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। রতিকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে চেয়েছিলেন তিনি, তবে রতি স্বামীর সাথে যেতে রাজি হলো না, স্বামীকে আশ্বস্ত করলো সে এই বলে যে, আকাশকে সাথে নিয়েই সে ডাক্তারের কাছে যেতে পারবে, কাজ ফেলে খলিলকে সময় দিতে হবে না।

যদি ও ডাক্তারের কাছে আদৌ গেলোই না রতি। সারা দিন বিছানায় শুয়ে বসেই কাটতে লাগলো ওর দিন রাত। আকাশ ও মনে মনে খুব সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। চুপচাপ লেখাপড়া করছে, রুম থেকে তেমন একটা বের হচ্ছে না, রাহুলের বাড়ী ও যাচ্ছে না, যেই বন্ধুকে একদিন না দেখলে আকাশ অস্থির হয়ে যায়, সেই বন্ধুর সামনে যেতে ও আজ খুব লজ্জা ওর। কিভাবে বন্ধুকে নিজের মুখ দেখাবে, সেটা ভেবে পাচ্ছে না আকাশ।

রাহুল ও প্রচণ্ড শকড হয়েছে। রতিকে সে দারুন সেক্সি আর হট মহিলা বলেই জানতো এতদিন। বন্ধুর কাছে সে কোনদিনই লুকায়নি যে ওর মায়ের প্রতি ওর দুর্বলতা আছে।

Comments

Scroll To Top